• ঢাকা
  • রবিবার , ২২ জুন ২০২৫ , সকাল ১১:৪৫
  • ৮ আষাঢ়, ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
হোম / রাজনীতি

নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রতিশ্রুতি নিয়ে অভ্যুত্থানের নায়করা এনসিপি'র মঞ্চে

রিপোর্টার : amarsonardesh.com
নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রতিশ্রুতি নিয়ে অভ্যুত্থানের নায়করা এনসিপি'র মঞ্চে ই-পেপার/প্রিন্ট ভিউ

আমার সোনার দেশ ডিজিটাল : ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের’ প্রতিশ্রুতি নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র (এনসিপি) আত্মপ্রকাশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে ধর্মগ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে। শুক্রবার বিকাল সোয়া ৪টার দিকে ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর একে একে পাঠ করা হয় গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল থেকে। তারপর পরিবেশন করা হয় জাতীয় সংগীত। এর মধ্যে সমাবেশস্থল ও আশপাশের এলাকা সমর্থকদের অংশগ্রহণে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সমাবেশের নির্ধারিত অংশের বাইরে দক্ষিণ প্লাজার সামনের অংশে খামারবাড়ি পর্যন্ত প্রায় পুরো সড়কেই অবস্থান রয়েছে মানুষের। জাতীয় সংগীতের পর চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং প্রত্যেকের ধর্ম অনুযায়ী প্রার্থনা করা হয়।

বক্তৃতা পর্বের শুরুতে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল্লাহ হায়দার বলেন, “এই তরুণদের নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ গত ৫৩ বছরে মানুষের যে অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যায় নাই, সে অধিকার প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রাম প্রতিষ্ঠা করা হবে।” বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, “নাগরিক পার্টি মনে করে, শহীদ ও আহতদের স্পিরিট ধারণ করে কীভাবে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু দেশের স্বার্থে আমরা এক থাকব।” বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহরিয়ার হাসনাত অপু বক্তব্য দেন। এরপর মঞ্চের ডাকা হয় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নায়কদের। একে একে মঞ্চে আসেন নাহিদ ইসলাম ও আখতার হোসেনসহ নেতারা। তারপর দেখানো হয় জুলাই অভ্যুত্থানের ওপর নির্মিত আরেকটি ডকুমেন্টারি। মঞ্চের সামনেই রাজনৈতিক নেতা, কূটনীতিক ও আমন্ত্রিত অতিথিদের আসন সাজানো রয়েছে। এরপরেই শহীদ পরিবার, জুলাই যোদ্ধা পরিবারের জন্য আসন। দুপুরে জুমার নামাজের পর থেকেই ছোট ছোট মিছিল নিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে জড়ো হতে দেখা যায় ছাত্র-জনতাকে। এ সময় মঞ্চের মাইক থেকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছিল- কোন কোন এলাকা থেকে কার নেতৃত্বে মিছিল আসছে।  বগুড়া থেকে আসা রায়হান নামে একজন বলেন, “আমার অনেকেই এসেছি এই মুহূর্তের সাক্ষী হতে। নতুন এই দলের হাত ধরে বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক ইতিহাস রচিত হবে বলে আশা করছি। “দেশের সংস্কারের প্রত্যাশা নিয়ে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, সেটার বাস্তবায়নে আজকে কী ঘোষণা আসে- সেটিই এখন দেখার বিষয়। নতুন এই দলের মাধ্যমে অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা পূরণ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।" ঢাকার কল্যাণপুর থেকে আসা ষাটোর্ধ এস এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “কয়দিন ধরেই শুনতেছি নতুন এই দল গঠন হবে, কারা কারা নেতৃত্বে আসছে- দেখছিলাম। আজ সামনে থেকে দেখতে আসলাম। “এই বয়সে সব রাজনৈতিক দলকেইতো দেখলাম, তরুণ প্রজন্ম এগিয়ে এসেছে। আশা করছি, এই দলেন উদ্যমী তরুণরা দেশ গঠন করতে ভূমিকা রাখবে।” সহযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা দিতে অনুষ্ঠাস্থলে এসেছেন আন্দোলনে আহতরা। গত ৪ অগাস্টে ইব্রাহিমপুরে আহত হয়েছিলেন আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আহমেদ। তিনি বলেন, “দেশের দূর্নীতিগুলো যেন দূর করা হয়, ইদানীং দেশে ছিনতাই-সন্ত্রাস বেড়েছে- তারা যেন এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, এই প্রত্যাশা নতুন দলের প্রতি।" ভোলা থেকে গুলশানে এসে ৫ অগাস্ট আহত হন শাকিল হোসেন। নতুন দলের মঞ্চের পাশে আসেন স্ট্রেচারে ভর করে। শাকিল  বলেন, “এখানে নতুন দলকে উৎসাহ দিতে এসেছি। বিগত সকল অনৈতিক ব্যাবস্থা বিলুপ্ত হোক।” 'ব্যাপক জমায়েতের' লক্ষ্য ধরে এই আয়োজনের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা সদস্যদের। সড়কের ওপর মঞ্চ তৈরি করায় মিরপুর সড়কের আড়ং থেকে খামারবাড়িমুখী রাস্তা বন্ধ রয়েছে। বেলা ৩টার পর থেকে অপরপাশে খামারবাড়ি থেকে আড়ংমুখী সড়কেও যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এজন্য 'সাময়িক অসুবিধার' জন্য এনসিপি'র পক্ষ থেকে 'দুঃখ প্রকাশ' করে বিবৃতি দেওয়া হয়। দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দলটির নেতা কর্মীদের পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহতরা অংশ নিয়েছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নিয়েছেন।



Bangladesh

আরও পড়ুন