• ঢাকা
  • মঙ্গলবার , ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , রাত ০১:০৩
  • ২৮ মাঘ, ১৪৩১
ব্রেকিং নিউজ
হোম / জাতীয়

ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে উত্তাল বাংলাদেশ

রিপোর্টার : amarsonardesh.com
ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে উত্তাল বাংলাদেশ ই-পেপার/প্রিন্ট ভিউ

আমার সোনার দেশ ডিজিটাল ডেস্ক: আগরতলার কুঞ্জবনে অবস্থিত বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলা, জাতীয় পতাকা ছিঁড়ে আগুন, ধারাবাহিক  উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়া সীমাহীন অপপ্রচারে প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার হওয়া হিন্দু উগ্রবাদী সংগঠন ইসকনের সাবেক নেতা বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে সোমবার ( ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে ভাঙচুর জাতীয় পতাকা নামিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়  ভারতের আরেক উগ্রবাদী সংগঠন হিন্দু  সংগ্রাম সমিতির অনুসারীরা। এর আগে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় বক্তব্য দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। তিনি বলেন, জাতিসঙ্ঘের নিয়ম মেনে যদি বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী পাঠানো যায়, তাহলে সেই ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি তিনি অনুরোধ জানাচ্ছেন। এর আগে, রোববার সিলেটের বিয়ানীবাজার সুতারকান্দি স্থলবন্দরের ওপারে ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ এলাকায় বাংলাদেশ অভিমুখে মার্চ করে হিন্দু ঐক্যমঞ্চের কয়েকশ নেতাকর্মী। একপর্যায়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশেরও চেষ্টা চালায়। সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ করিমগঞ্জ পুলিশের সদস্যরা কাঁটাতারের ব্যারিকেড দিয়ে তাদের বাধা দেয়।

আজাদি আজাদি স্লোগানে উত্তাল ঢাবি

সোমবার ( ডিসেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। সময় বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা এসে মিছিলে যোগ দেন। পরে মিছিলটি ভিসি চত্বর হয়ে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক সমাবেশে মিলিত হয়। শিক্ষার্থীরা গোলামী না আজাদি, আজাদি আজাদি; আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম; দিল্লী না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা; ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দাও জনগণ; হাইকমিশনে/আগরতলায় হামলা কেন, দিল্লি তুই জবাব দে; দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ, ভারত ভারত করিস না, পিঠের চামড়া থাকবে না ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানান। মিছিলের পর বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, তারা আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ। তাদের সাথে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকবে, প্রতিবেশী হিসেবে ভালো সম্পর্ক থাকবে। কিন্তু কোনোভাবেই তাদের সাথে আমাদের রাজা-প্রজার সম্পর্ক হতে পারে না। ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলার জন্য অবশ্যই ভারতকে ক্ষমা চাইতে হবে। তারা আরো বলেন, ভারতকে বলতে চাই দেশে আর আওয়ামী লীগের ক্ষমতা নেই। সুতরাং তারা যেন আওয়ামী লীগের আমলের মতো করে দেশে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা না করে। দিল্লিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই শরীরে এক ফোঁটা রক্ত থাকা পর্যন্ত আমরা ভারতের আধিপত্য মেনে নেব না। যেভাবে আমরা হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছি সেভাবেই আমরা দিল্লির আগ্রাসনও রুখে দেব। তারা বলেন, গত ১৬ বছর পরে বাংলাদেশ যখন দিল্লির গোলামি ছেড়ে মাথা উঁচু করে দাড়িয়েছে, দিল্লির দিকে চোখে চোখ রেখে তাকাচ্ছে দিল্লির ঘুম তখন হারাম হয়ে গেছে। তাদের দাবি, ধরনের ঘটনা কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি অবমাননা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল

আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ক্যাম্পাসের বটতলা এলাকা থেকে মশাল মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরসহ কয়েকটি সড়ক ঘুরে আবার বটতলায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সমাবেশ করেন তারা। সেখানে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম, ছাত্রশিবিরের জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান, গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আবদুর রশিদ।

বাংলাদেশের মানুষ কারো দাদাগিরি পছন্দ করে না : জামায়াত আমির

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান রাতে তার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেয়া এক পোস্টে লিখেছেন- বাংলাদেশের মানুষ তাদের মাথার ওপর কারো দাদাগিরি একদম পছন্দ করে না।তিনি লিখেছেন, ভারত নিজের দেশে তার প্রতিবেশী দেশের কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। সেখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকার তাদের থাকতে পারে না।


রংপুরে ভারতীয় পণ্য মিডিয়া বর্জনের ডাক

রংপুরে ভারতীয় পণ্য মিডিয়া বর্জনের ডাক দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একইসাথে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত ষড়যন্ত্র বন্ধ না করলে বাংলাদেশের সকল ভারতীয় দূতাবাস বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

সোমবার ( ডিসেম্বর) রাতে প্রেস ক্লাবের সামনে রংপুর জেলা মহানগর কমিটি এবং রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ভারতকে হুঁশিয়ারি দিতে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করে। বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবারো প্রেস ক্লাবে এসে সমাবেশ করে তারা। সময় বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটি রংপুরের সদস্য সচিব আলমগীর নয়ন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা আহ্বায়ক ইমরান হোসেন, মহানগরের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি, জেলা সদস্য সচিব ডা. আসফাক আহমেদ জামিল, মহানগর সদস্য সচিব রহমত জেলা মুখপাত্র ইয়াসির আরাফাত, মহানগর মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকার প্রমুখ।

অন্যদিকে রাত সাড়ে ৯টায় শহীদ আবু সাঈদ চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। মিছিলটি পার্কের মোড় হয়ে মডার্ন মোড় ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এসে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন, মো: রাকিব মুরাদ, রহমত আলি, ফাহিম ইয়ালমিন, আশিকুজ্জামান জয়, জাহিদ হাসান জয় প্রমুখ। এ সময় বক্তারা বলেন, ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গিয়ে ভারতকে দিয়ে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে। এরই অংশ হিসেবে ভারতে বাংলাদেশের দূতাবাসে হামলা চালিয়েছে। আমরা মুসলমানরা সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করি। যতটুকু বেড়েছেন, সেখানেই থেমে যান। তা না হলে কঠোর পরিণতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে ভারতকে।বক্তারা আরো বলেন, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বাংলাদেশের ভারতীয় কোনো দূতাবাস আস্ত থাকবে না। ভারতকে আগ্রাসী মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কারণ এখন আর তাদের বুবু নেই। তারা বুবুকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে তা ছাত্র-জনতা মেনে নিবে না। সময় বক্তারা ভারতীয় মিডিয়া পণ্য বর্জন করার আহ্বান জানান দেশবাসীকে। তারা বলেন, উগ্রবাদী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকেই। তা না হলে ভারত ইসকনকে দিয়ে উস্কানির মাধ্যমে দেশে অরাজক সৃষ্টির চেষ্টা অব্যাহত রাখবে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার ( ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়। সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক তানভীর মণ্ডলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, হাসানুল বান্না অলিসহ অন্য সমন্বয়করা। সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, হাজারো ছাত্র-জনতার কোরবানির বিনিময়ে চব্বিশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে আমাদের অন্যতম দাবি ছিল ভারতীয় আগ্রাসন থেকে মুক্তি পাওয়া। আমরা আর কোনো রাষ্ট্রের গোলামির পাত্র হতে চাই না। অস্তিত্বের প্রশ্নে যারা ভারত প্রীতি ছাড়তে পারে না, তাদের সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নাই। আমরা স্বৈরাচারী হাসিনার পতন ঘটিয়েছি। ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার লড়াই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। সংগ্রামে সকলকে পাশে চাই।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার ( ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি ভিসি ভবন থেকে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে এসে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা দিল্লি না ঢাকা, গোলামি না রাজপথ, ভারতের আগ্রাসন ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও, আগরতলায় হামলা কেন, দিল্লি তুই জবাব দে প্রভৃতি স্লোগান দেন। মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা গ্রাউন্ড ফ্লোরে সমাবেশে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমের শিক্ষার্থী শামীম আহসান বলেন, বিগত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের তত্ত্বাবধানে ইসকন নামের উগ্রবাদী সংগঠনের মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশে উগ্র হিন্দুত্ববাদ কায়েমের চেষ্টা চালিয়েছে।মৃত্তিকা পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ