স্টাফ রির্পোটার,ঢাকা: একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি। আইনজীবীরা বলছেন, আসামি করা হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। তদন্তে প্রমাণ না পাওয়ায় তারা সবাই খালাস পেয়েছেন। কিন্তু, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় হতাহতের ঘটনা তো মিথ্যে নয়। ভুক্তভোগীরা কিভাবে বিচার পাবেন, সেটাই প্রশ্ন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলই এখন একমাত্র ভরসা। প্রমাণ না পাওয়ায় একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সব আসামিকে খালাস দিয়েছে হাইকোর্ট। তবে, প্রশ্ন উঠেছে ২৪ জন নিহত এবং প্রায় ৩০০ জন আহতের হামলায় তাহলে প্রকৃত দায়ী কারা এবং হতাহতদের স্বজনরা কীভাবে বিচার পাবে? আইনজীবীদের মত, প্রকৃত আসামিদের বাদ দিয়ে সম্পূরক চার্জশিটে রাজনৈতিক বিবেচনায় আসামি করা হয়েছে। এতে মূল অভিযুক্তরা রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এখন বিচার পেতে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে গ্রেনেড হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের। সুপ্রিমকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, ‘দীর্ঘদিন এই মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে আমার যে অভিজ্ঞতা সেটা হলো, মূল আসামি কারা এটা বের করার কোনো চেষ্টা আদৌ হয়নি। তদন্ত সঠিকভাবে করে মূল হোতা কারা, মূল দায়ী যারা তাদেরকে যদি বের করে নিয়ে আসত তাহলে সে মামলায় সাজা হতো কি খালাস হতো সেটা ভবিতব্য। অন্তত একটা কথা বলা যেত সঠিক ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে।’এদিকে, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ের নথি দেখে আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল। আর বিএনপির আইনজীবীদের দাবি, গ্রেনেড হামলায় হতাহতের পরিবারও চায় এই মামলার প্রকৃত আসামিরা বেরিয়ে আসুক। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামাল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দাবি জানাই, এই একুশে আগস্ট হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত অপরাধীদের বিচার করা উচিত। কারণ এই বাংলাদেশ আমাদের বাংলাদেশ। কোনো হত্যাকাণ্ডকেই বিচারের বাহিরে রাখা উচিত না।’ গ্রেনেড হামলায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা দুটি মামলারই বাদী পুলিশ। তাই রাষ্ট্রপক্ষ ছাড়া আলাদা আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ নেই। রোববার বহুল আলোচিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিলের রায় দেন হাইকোর্ট। এতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিচারিক আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামিকেই খালাস দেওয়া হয়। মামলাটির বিচারিক আদালতের রায়ও বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, মামলার বিচার অবৈধ ছিল। ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনার সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় দলটির ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত হন। আহত হন অন্তত ৩০০ জন।