ডেস্ক রিপোর্ট,আমার সোনার দেশ : ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন এসেছে। এছাড়া উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। তবে এগুলোর সন্তোষজনক জবাব আসেনি। সোমবার সন্ধ্যার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে ছাত্র সংগঠনগুলোর বৈঠকে এ নিয়ে প্রশ্ন এসেছে বলে সভাসূত্রে জানা গেছে। এতে ১৯টি ছাত্র সংগঠন অংশ নেয়। এ বিষয়ে সভায় হাসনাত আবদুল্লাহ উত্তর দিয়েছেন, শুধু প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে তারা মনোনীত করতে পেরেছেন। বাকিদের নিয়োগের বিষয় প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে থিওরিটিক্যালি ড. ইউনূসের ওপরেই বর্তায়। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সরকারের সহযোগী কোনো প্ল্যাটফর্ম নয়। তাদের অনেক দাবি সরকার মেনে নেয়নি। ছাত্র উপদেষ্টারা সরকারে গিয়ে তাদের মতো করে সরকার চালাচ্ছেন। ফলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন একটি প্রেশার গ্রুপ হিসেবে নিজেদের মতো করে চলছে– এমন উত্তর এসেছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ঐক্য ফিরিয়ে আনতে আগামী সপ্তাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবে ছাত্র সংগঠনগুলো। এছাড়া ফ্যাসিবাদবিরোধী সব ছাত্র সংগঠন নিয়ে জাতীয় ছাত্র কাউন্সিল গঠন করা হবে। এতে সব ছাত্র সংগঠনের দু’জন করে প্রতিনিধি থাকবেন। এই ছাত্র কাউন্সিলের আলোচনার মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মপরিধি নির্ধারিত হবে। তবে এটির ফরম্যাট কীভাবে হবে, আগামী এক সপ্তাহ পর আরেকটি সভায় তা চূড়ান্ত করা হবে। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের বলব, আপনাদের নিয়ে ষড়যন্ত্র হবে। পরিবেশ, সম্পদ, ঐক্য নষ্ট হয়, ফ্যাসিবাদী শক্তি পুনর্বাসিত হতে পারে– এমন কাজ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা হতে দিতে পারে না। আগে আকার-ইঙ্গিতে কোনো কর্মসূচি দিলেও প্রশাসন সেটি ধরে ফেলত। অথচ দুই দিন আগে ঘোষণা দেওয়া হলেও মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন কিছু করতে পারেনি। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের টোটাল ব্যর্থতা। এ জন্য প্রশাসনিক কাঠামো ঢেলে সাজানোর কথা বলছি। হাসনাত আরও বলেন, আমরা এই আলোচনা অব্যাহত রাখব। আমাদের পরবর্তী বৈঠকে ছাত্র রাজনীতির কাঠামো নিয়ে আলোচনা হবে। তরুণ প্রজন্ম রাষ্ট্র কাঠামোয় কীভাবে ভূমিকা রাখবে, এটি নিয়ে কথা হবে। ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে। আজ মঙ্গলবার ছাত্র সংগঠনগুলোর আরেকটি বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান তিনি। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গত তিন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত এমপি এবং মন্ত্রীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। তা না হলে বিদেশ থেকে তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত থাকবে। এ ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দ্রুত সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আজ নিচ্ছি, কালকে নিচ্ছি– এ ধরনের বিষয় যেন না হয়। তিনি বলেন, আমরা আরও নীতিগত সিদ্ধান্তে এসেছি– এ সরকার আওয়ামী লীগ আমলের প্রশাসনিক কাঠামোয় ক্ষমতায় এসেছে। এখনও সেই প্রশাসনিক কাঠামো বিদ্যমান। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রশাসন থেকে আওয়ামী লীগের সুপারিশে নিযুক্তদের বাদ দিয়ে প্রশাসনিক কাঠামো পরিশুদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।