কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় সন্তান বিক্রির পর যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় মুখলেছ মিয়া (৪০) নামের একজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ আফরোজের আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে তিনি আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করে। মুখলেছ মিয়া পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের কাজিহাটি গ্রামের আবুল হাসেনের ছেলে।রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর জেসমিন আরা রোজী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।জানা যায়, ২০১৩ সালের (২৪ আগস্ট) সুখের সংসার গড়ে তোলার আশ্বাসে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার কাজিহাটি গ্রামের মোখলেছ মিয়ার সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন কামরুন্নাহার। বিয়ের পর তাদের সংসারে প্রথমে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু অর্থলোভী মোখলেছ মিয়া শিশুটিকে বিক্রি করে দেন। পরে পুত্রসন্তানের জন্ম হলে সেটাকেও বিক্রির পাঁয়তারা করেন। পাশাপাশি যৌতুকের দুই লাখ টাকার জন্য কামরুন্নাহারের ওপর বাড়ায় নিপীড়ন-নির্যাতন; দেয় ডিভোর্সের হুমকি। এমন পরিস্থিতির শিকার হয়ে শেষ পর্যন্ত আদালতের আশ্রয় নেয় একই গ্রামের দিনমজুর মধু মিয়ার মেয়ে কামরুন্নাহার। গত (০৮ নভেম্বর) যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক জিন্নাত আরা ঘটনাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা স্বপন কুমারকে। দীর্ঘ তদন্তের শেষে স্বপনকুমার আদালতে তদন্ত প্রতিদেন জমা দেয়। এদিকে ওই ঘটনায় মামলা রুজুর পর উপযুক্ত বিচারের আশায় বুক বেঁধে অপেক্ষা করলেও বিবাদীপক্ষ থেকে নানাবিধ হুমকি-ধামকির কারণে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলার দশা হয়েছে কামরুন্নাহারের। ছোট্ট শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে এখন দিশেহারা তিনি।এদিকে, এই ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়। সে সময় তার ছেলেকে ভরণপোষণসহ মানসিকভারসাম্যহীন স্ত্রীর দেনমোহরের টাকা ফেরৎ দেয়ার আশ্বাস দেন মুখলেছ। এরপর জাকজমকপূর্ণভাবে ছেলেকে নিজের জিম্মায় নিয়ে সুন্নতে ক্ষতনা করিয়েই লাপাত্তা হয়ে যায় পিতা মুখলেছ। পরে দরবারকারীরা প্রশ্ন তুললে তাদের ওপরও হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে মুখলেছের বিরুদ্ধে।