আমার সোনার দেশ ডিজিটাল:প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণের ঠিক আগেই মুখ খুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জানালেন, তিনি দুই দেশকেই চাপ দিয়েছিলেন সংঘর্ষ বন্ধ করার জন্য। অন্যথায় ব্যবসার উপর প্রভাব পড়বে বলেও দুই দেশকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন তিনি।প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণের ঠিক আগেই মুখ খুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জানালেন, তিনি দুই দেশকেই চাপ দিয়েছিলেন সংঘর্ষ বন্ধ করার জন্য। অন্যথায় ব্যবসার উপর প্রভাব পড়বে বলেও দুই দেশকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন তিনি। দু’পক্ষকেই তিনি চাপ দিয়েছিলেন সংঘর্ষ বন্ধ করতে হবে, নয়তো তাদের সঙ্গে কোনও ব্যবসা করা হবে না।
সোমবার হোয়াইট হাউসে বক্তৃতার শুরুতেই ভারত-পাকিস্তানের প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন তিনি। ট্রাম্প জানান, মার্কিন প্রশাসন মধ্যস্থতা করে দুই দেশের মধ্যে তাৎক্ষণিক সংঘর্ষবিরতি ঘটিয়েছে। এটি একটি স্থায়ী সংঘর্ষবিরতি হবে বলেও আশাবাদী তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে একটি ভয়ঙ্কর সংঘর্ষ বন্ধ করা গিয়েছে। দুই দেশেরই প্রচুর পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। দেখে মনে হচ্ছিল, দুই দেশের কেউই থামতে চাইছে না।” ট্রাম্প জানান, এই অবস্থায় মধ্যস্থতা করতে নেমে দুই দেশের সঙ্গেই বাণিজ্য বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছিল আমেরিকা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমরা বলেছিলাম, এটা বন্ধ করুন। আমরা আপনাদের সঙ্গে অনেক বাণিজ্য করতে পারি। আপনারা এটা বন্ধ করলে আমরা বাণিজ্য করতে পারি। কিন্তু যদি আপনারা এটা বন্ধ না-করেন, আমরা (আপনাদের সঙ্গে) কোনও বাণিজ্য করব না।” এর পরে ট্রাম্প নিজেই জানান, বাণিজ্যিক বিষয়টিকে তিনি যে ভাবে ব্যবহার করেন, তা অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারেন না।
ট্রাম্প আরও বলেন, “তারা (ভারত এবং পাকিস্তান) যুদ্ধ বন্ধ করার নেপথ্যে অন্যতম বড় কারণ হল ব্যবসা।” মার্কিন মধ্যস্থতা পর্বের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি জানান, ভারত এবং পাকিস্তান দুই দেশের নেতারাই নিজেদের দিক থেকে অটল ছিলেন। এই সংঘর্ষবিরতিতে মধ্যস্থতা করতে আমেরিকা অনেক সাহায্য করেছে বলেও দাবি ট্রাম্পের। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, ভারত এবং পাকিস্তান উভয় দেশকেই বাণিজ্যের দিক থেকে সাহায্য করতে প্রস্তুত আমেরিকা। বাণিজ্য নিয়ে ইতিমধ্যে ভারতের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। শীঘ্রই পাকিস্তানের সঙ্গেও আলোচনা শুরু হবে বলে হোয়াইট হাউসের বক্তৃতায় জানিয়েছেন তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, তাঁর প্রশাসন একটি ভয়ঙ্কর পারমাণবিক সংঘাত আটকাতে পেরেছে। এটি একটি পরমাণু যুদ্ধে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল বলে আশঙ্কা ট্রাম্পের, যার ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর সম্ভাবনা ছিল বলে মনে করছেন তিনি। ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতি কার্যকর হওয়ার জন্য মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স এবং মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিওকেও ধন্যবাদ জানান ট্রাম্প।
সোমবার রাত ৮টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ শুরু হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। মোদীর বক্তৃতা শুরুর ঠিক আধ ঘণ্টা আগেই ট্রাম্পের এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসে। বস্তুত, গত শনিবার ভারত এবং পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়েছে। সেটিও প্রথম ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টই। ভারত বা পাকিস্তানের তরফে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসার অনেকটা আগেই ট্রাম্প নিজের সমাজমাধ্যম হ্যান্ডলে দু’দেশের যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। মার্কিন প্রশাসনের মধ্যস্থতার কথাও উল্লেখ ছিল সেখানে। ট্রাম্পের ঘোষণার পরে পাকিস্তান থেকে সরকারি বিবৃতি আসে, তারও পরে ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী সরকারি ভাবে সংঘর্ষবিরতির কথা ঘোষণা করেন।
ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি নিয়ে রবিবারও নিজের সমাজমাধ্যমের পাতায় একটি পোস্ট করেছিলেন ট্রাম্প। সেখানেও তিনি লিখেছিলেন, ভারত এবং পাকিস্তান অনুধাবন করতে পেরেছে যে ‘আগ্রাসন’ বন্ধ করার সময় এসেছে। এতে আরও বেশি মৃত্যু এবং ধ্বংসের সম্ভাবনা ছিল, লক্ষ লক্ষ নিরীহ সাধারণ মানুষের প্রাণহানির সম্ভাবনা ছিল। ঘটনাচক্রে, সমাজমাধ্যমের ওই পোস্টেও ভারত এবং পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি আভাস দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তিনি লিখেছিলেন, “যদিও এই নিয়ে আলোচনা হয়নি, তবে আমি দুই দেশের সঙ্গেই বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে চলেছি।”