আমার সোনার দেশ ডিজিটাল : বিদায়ী বছরে সবল ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। ওয়ান ব্যাংকের মুনাফায় প্রবৃদ্ধি শতভাগেরও বেশি। ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ ও ডলার বেচাকেনার মাধ্যমেই মূলত ব্যাংকগুলোর এই মুনাফা। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়ানোর সুবিধা জনসাধারণ না পেলেও ভালোভাবেই ঘরে তুলেছে ব্যাংকগুলো। আইএমএফের পরামর্শে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দফায় দফায় ঋণের সুদহার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নীতি সুদহার ৫ থেকে বাড়িয়ে এখন ১০ শতাংশ। এ পন্থার সুফল সাধারণ মানুষ না পেলেও, পেয়েছে দেশের ব্যাংক খাত। চলমান আর্থিক সংকটের মধ্যেও বিদায়ী বছর পরিচালন মুনাফা বেড়েছে বেশিরভাগ ব্যাংকের।
১২৯
দশমিক ৯১ ভাগ বেড়েছে ওয়ান ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা। ২০২৩ সালে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল ৩৬১ কোটি টাকা, এবার তা হয়েছে ৮৫০ কোটি টাকা। ৭২ ভাগের বেশি বেড়ে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা। ২০২৩ সালে এ মুনাফা ছিল ১ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা। রেকর্ড ২ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা পূবালী ব্যাংকের। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। ব্যাংকটিতে সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকার আমানত বেড়েছে। সিটি ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ২ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা। ডাচ বাংলা ব্যাংকের ২ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা। এছাড়া পরিচালন মুনাফা বেড়েছে এশিয়া, ইস্টার্ন, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, এক্সিম, প্রিমিয়ার, ওয়ান, মার্কেন্টাইল, মেঘনা ও শাহ্ জালাল ইসলামী ব্যাংকের। হাতে টাকা থাকা ব্যাংকগুলোর বেশিরভাগই সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করেছিল। তারা ৫ থেকে ৬ শতাংশ সুদে টাকা জমা নিয়ে, সেই টাকা ১২-১৩ শতাংশ সুদে ট্রেজারি বিল-বন্ডে লাগিয়েছিল। এই সুদের পার্থক্যই ব্যাংকগুলোর মুনাফা অনেক বেশি বাড়িয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত আলী খান বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় যেটা আমাদের ১ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা বেশি। এটা আমাদের একটা বড় সাফল্য। অনেক বাধা বিপত্তির স্বত্বেও আমাদের কিছু পদক্ষেপ ছিল যেগুলোর কারণে আমরা এ অর্জনটা করতে পেরেছি।’ অনিয়ম-দুর্নীতি ও সুশাসনের তীব্র ঘাটতির কারণে গত দেড় দশক ধরেই দেশের ব্যাংক খাত ধারাবাহিকভাবে দুর্বল হয়েছে। তবে, ২০২৪ সাল ছিল দেশের ব্যাংক খাতের জন্য ইতিহাসের সবচেয়ে নাজুক বছর। গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ব্যাংক খাত সংস্কারের উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।