স্টাফ রির্পোটার,বগুড়া
: এখন টেলিভিশনের বগুড়া ব্যুরো প্রধান কর্তৃক সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিরামহীন অপপ্রচারের ঘটনায় বগুড়া প্রেসক্লাব এবং সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র নেতৃবৃন্দ তীব্র নিন্দাসহ প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সেই সাথে এখন টেলিভিশনের বগুড়া ব্যুরো প্রধান বহুল বিতর্কিত তোলাবাজ,ফ্যাসিস্ট
সরকার সমর্থিত সাংবাদিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত সুবিধাভোগী মাজেদ রহমানকে বগুড়ায় অবাঞ্ছিত ঘোষনা করা হয়েছে। এক
যৌথ বিবৃতিতে বগুড়া প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক
ওয়াসিকুর রহমান বেচান, সদস্য সচিব সবুর শাহ লোটাস এবং সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র
সভাপতি গনেশ দাস ও সাধারন সম্পাদক এস. এম. আবু সাঈদ বলেন, “আমরা
অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি এখন টেলিভিশনের বগুড়া প্রতিনিধি মাজেদ রহমান সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র
সভাপতি গনেশ দাস ও সাধারন সম্পাদক এস এম আবু সাঈদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি গোপনে সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র
সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকসহ সাংবাদিক নেতাদের নাম, ঠিকানা সংগ্রহ করে তাদের নামে মিথ্যা মামলা দায়েরের চক্রান্ত করছেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র পক্ষ থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের পর মাজেদ রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ও বিষোদগার করে চলেছেন। এমতাবস্থায় অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য নেতৃবৃন্দ সকলকে
সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। তবে জয়পুরহাট থেকে বিতাড়িত বহুল বিতর্কিত তোলাবাজ সাংবাদিক মাজেদ রহমানকে বগুড়ায় অবাঞ্ছিত ঘোষনা করায় পেশাজীবী সাংবাদিকসহ নানান শ্রেনী
পেশার মানুষ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, তোলাবাজ সাংবাদিক
ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী মাজেদ রহমান জয়পুরহাটে পেশাগত জীবনে ধর্নাঢ্য
ব্যক্তি,প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে বিভিন্ন রকমের অপকৌশল প্রয়োগ করে মোটা অঙ্কের
টাকা হাতিয়ে নিতো। ফ্যাসিস্ট সরকারের সাবেক হুইপ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু
সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের গোঁপন সকল অপকর্মের সঙ্গী ছিলো বিতর্কিত সাংবাদিক মাজেদ
রহমান। আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে স্থানীয় আওয়ামী
লীগের প্রবীন নেতাদের সাথেও অসভ্য আচরণ করতো। আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের
বিশ্বস্থতা বাড়ানোর জন্য মিডিয়াকে ব্যবহার করে জয়পুরহাটের আওয়ামী লীগের নেতাদের
রাজনৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রয়াসে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের কারণে জয়পুরহাট জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এস এম সোলাইমান আলী ও আইনজীবী অ্যাডভোকেড চপল মামলা দায়ের করে।
তারপরেও মাজেদ রহমানের দৌরাত্ম কেউ কমাতে পারেনি। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, অনৈতিকভাবে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ফ্যাসিস্ট
সরকারের সুবিধাভোগী এই বিতর্কিত সংবাদকর্মি উত্তরবঙ্গের বানিজ্যিক রাজধানীখ্যাত
বগুড়ায় সময় টিভির দায়িত্ব নেয়। সময় টিভিতে নিয়োগ পেতে মোটা অঙ্কের টাকা ডোনেশন
দিতে হয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। ধীরে ধীরে বগুড়ায় কতিপয় টিভি চ্যানেলের
সাংবাদিকদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। বগুড়া শহরসহ পুরো জেলাজুড়ে তথ্য
সংগ্রহের নামে দালাল নিয়োগ দেয়। সেই সব দালালদের মাধ্যমে সমাজের বিত্তবান সম্মানিত
ব্যক্তিদের সুকৌশৈলে ব্লাকমেইল করে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। ফ্যাসিস্ট
সরকারের আমলে কোটিপতি বনে যাওয়া বিতর্কিত এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ
নেই। বিতর্কিত এই সাংবাদিক বতমানে এখন টিভি বগুড়ার ব্যুরো প্রধানের দায়িত্বে
রয়েছে। সূত্রের খবর, নিজেকে অনেক বড় মাপের টিভি সাংবাদিক হিসাবে উপস্থাপন করতে খুব
স্বচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকে তোলাবাজ সাংবাদিক মাজেদ রহমান। সময় টিভিতে থাকাবস্থায় ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর
( বুধবার ) বগুড়া সদরের দশটিকায়
সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের বিশেষ
আশ্রয়ণ প্রকল্পের সংবাদ
সংগ্রহের নামে নিশিন্দারা ইউনিয়ন
পরিষদের সদস্য লুৎফর রহমান লালের
কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। অন্যথায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগে ইউপি সদস্যকে
ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এ নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে জনরোষে পড়ে মাজেদ রহমান ও
তার সহযোগী। নিজের অপকম আড়াল করতে প্রভাব খাটিয়ে পরের দিন ৩১ ডিসেম্বর ( বৃহস্পতিবার ) সদর থানায় লুৎফর রহমানসহ
চারজনের নাম
উল্লেখ করে অজ্ঞাত
পরিচয় আরও ১০/১২
জনকে আসামি করে মামলা করে মাজেদ রহমান। অনৈতিক প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায়
গ্রেপ্তার হয়ে কারাবাস করে ইউপি সদস্য লুৎফর রহমান লাল।
এদিকে বগুড়া শহরের নবাব বাড়ীরোডস্থ শপিংমল সাবেক আলতাব আলী সুপার মার্কেট,বতমানে
যা সরিফা ট্রেড সেন্টার লিমিটেড (এস.টি.সি.লি:) নামে পরিচিত। এই প্রতিষ্ঠানের একটি
সূত্র জানায়, সময় টিভির সাবেক বিতর্কিত সাংবাদিক মাজেদ রহমান পারিবারিক একটি মামলা
সংক্রান্ত বিষয়ে সরিফা ট্রেড সেন্টারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আনোয়ার হোসেন রানা
এলএলবি’র নিকট মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় তোলাবাজ
সাংবাদিক মাজেদ রহমান অপরপক্ষ সরিফ বিড়ি ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে মোটা
অঙ্কের টাকা নিয়ে একই বিষয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একাধিকবার মানসম্মানহানিকর মিথ্যা তথ্য
উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ ও প্রচার করে। এক পর্যায়ে মাজেদ রহমান ও তার
সিন্ডিকেট সরিফ বিড়ি ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষের দাসে পরিণত হয়। সরিফ বিড়ি ফ্যাক্টরীর
জাল ব্যান্ডরোল লাগানো বিড়ি ভর্তি আটক ট্রাক,জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করায় মামলা
থেকে মালিকপক্ষকে বাদ দেওয়ার জন্য কাস্টমস অফিস ও থানায় তদবিরসহ বিভিন্ন অনৈতিককাজে
টাকার বিনিময়ে সহযোগিতা করতো। যে কারণে সরিফ বিড়ি ফ্যাক্টরী জাল ব্যান্ডরোল
লাগালেও মামলায় কখনোই মালিক পক্ষকে আসামি করা হয়নি। মামলায় আসামি ও হাজতবাস করেছে
ড্রাইভার ও কমচারীরা। এই বিতর্কিত ধান্দাবাজ সাংবাদিক মাজেদ রহমান ও তার সিন্ডিকেট
সরিফ বিড়ি ফ্যাক্টরীর অনৈতিক কমকান্ডে এখনো পেছন থেকে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে বলে
সূত্রের দাবি। এ প্রসঙ্গে জানতে সরিফা ট্রেড সেন্টারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আনোয়ার
হোসেন রানা এলএলবি’র সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, আনোয়ার
হোসেন রানা এলএলবি নানান ঝামেলার কারণে কয়েক মাস যাবত দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।
কবে নাগাদ ফিরবেন,তা কেউ বলতে পারেননি। রাজধানী ঢাকার উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৪৪ বছরের মো. আলী হুসেন নামের এক ব্যক্তি গুলিতে নিহতের ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ ১৮৯ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর দায়েরকৃত হত্যা মামলায় এখন টিভি বগুড়ার ব্যুরো প্রধান মাজেদ রহমান অন্যতম আসামি হিসাবে রয়েছে। সূত্রের খবর গত ১৮ জুলাই কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলাকালে আন্দোলনকারীদের সম্মুখ সারিতে থাকা আলী হুসেনকে লক্ষ্য করে গুলি করলে তার পেট, বুক ও মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়। পরবর্তীতে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলী হুসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। এসব বিষয় নিয়ে এখন টেলিভিশনের বগুড়া ব্যুরো প্রধান মাজেদ রহমানের সাথে যোগাযোগ করার
চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।